একই সঙ্গে এটিও এখানে খেয়াল করা দরকার যে, প্রযুক্তির ব্যবহার গত দুই দশকে যে পরিমাণে বেড়েছে তা ১৯৯০-এর আগেপাছে ছিল না। আজ যা ইন্টারনেট, অনলাইন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার ভিন্ন ভিন্ন উপাদান তখন অনেকের চিন্তার বাইরের বিষয় ছিল। এগুলো যে আসছে সে ইঙ্গিতও তো হয়তো ঠিকঠাক পাওয়া যায়নি। কিন্তু তখনকার প্রযুক্তি কীভাবে দিনে দিনে ক্ষতির কারণ হতে পারে তার মারাত্মক সব ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন। ওই কথার কুড়ি বছর বাদে, গত অন্তত বছর দশেক ধরে আমাদের চারদিকে সবচেয়ে বেশি, যা হাহাকারে পরিণত, তা হলো প্রযুক্তির এক সর্বগ্রাসী রূপ, জনজীবনের সব ধরনের সংযোগের কায়দা আর ভাষা ও যোগাযোগকে একেবারে উল্টে দিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত না লিখলেও চলে। কিন্তু বিজ্ঞানচর্চাহীন প্রযুক্তি, শিক্ষায় বিজ্ঞান-চিন্তাশূন্য একটি সমাজ যে সাংস্কৃতিক রক্তশূন্যতায় দারুণভাবে ভুগবে, সেই ভবিষ্যদ্বাণীর এমন সম্পূর্ণ ফলে যাওয়া বিস্ময়কর। সংস্কৃতির অপ আর সাধু বলে কিছু নেই, কিন্তু আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এখানে অপসংস্কৃতি বলতে কী বুঝিয়েছেন সেটি ভাঙিয়ে বলাও অপ্রয়োজনীয়। সাংস্কৃতিক শূন্যতা এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে এ বিষয়েও প্রত্যেকের ধারণা আছে। এখানে বলার কথা আর বোঝার কথা, যে বাস্তবতায় একটি সমাজ তখন প্রবেশ করেনি, তার অনেক আগেই তিনি সেই বিষয়ে, একজন ছোটগল্প লেখক একটি সমাজে যে সংকটে ভবিষ্যতে মুখোমুখি হবেন বলে মনে করছেন, তিনি দিয়েছেন তার চরম পূর্বাভাস। তাহলে, ‘ছোটগল্প কি মরে যাচ্ছে?’ এ কথায় ওই শিল্পমাধ্যম একটি সামাজিক বাস্তবতায় যে সংকটে পড়েছে ও পড়বে, সে কথা তিনি স্বীকার করেছেন, কিন্তু এ কথা বলেননি যে, মাধ্যমটি